বিয়ে একটি পবিত্র বন্ধন। বিয়ের পর দু’টি মনের আবেগ, অনুভ‚তি থেকে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। এরপর ধীরে ধীরে একে অপরকে খুব কাছে থেকে জানতে পারে। মনের মিল হলেই জীবনের বাকিটা পথ এক সঙ্গে পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন দেখে। এতো কিছুর পর স¤পর্ক যখন মাঝ পথে থেমে যায় তখন প্রণয় পরিণতি পায়না পরিণয়ে। মাঝ পথেই দু’জনের পথ আলাদা হয়ে যায়। এ আবার কোন রহস্য ? কেনই বা এ মায়া মিলায়, উড়ে যায় প্রেম কর্প‚রের মতো। তবে কি প্রেম যে ক্ষনবিলাস, শাশ্বত প্রেমের সন্ধান যে নিষ্ফল- তা-ই মহা সত্য বলে জানব সুধীন্দ্রনাথের মতো, “অসম্ভব প্রিয়তমে, অসম্ভব শাশ্বত স্মরণ; অসঙ্গত চিরপ্রেম; সংবরন অসাধ্য অন্যায়।’ এই বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারে না অনেকেই। বলছিলাম এমন ঘটনার শিকার নির্যাতিতা গৃহবধূ বিউটি আক্তারের কথা। এই মানসিক যাতনা তিলে তিলে গ্রাস করে ফেলছে জীবনকে। তাই যৌতুকলোভী স্বামীর বর্বরতা আর নিষ্ঠুর আচরণের প্রতিবাদে মামলার আশ্রয় নিলেন ভুক্তভোগী নির্যাতিতা বিউটি আক্তার।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের মেয়ে বিউটি আক্তারের সাথে গত ০৮-১০-২০১৪ ইং তারিখে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের কেবলকৃষ্ণ বকুলতলা গ্রামের সৈয়দ আলীর পুত্র বাংলাদেশ পুলিশ সদস্য (রাঙ্গামাটি সদর কোর্ট কনেস্টবল নং ১৭৮৬) শাহাজুল ইসলামের রেজিঃকৃত কাবিননামা মুলে বিয়ে হয়। বিয়ের পর গভীর ভালোবাসার স¤পর্কে স্বামীর সাথে জীবনের বাকিটা পথ পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন দেখেন গৃহবধূ বিউটি আক্তার। এ স্বপ্ন নিয়ে দা¤পত্য জীবন শুরু করেন শ্বশুরালয়ে। এখানে অবস্থানকালেই তাদের ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান নাম সুমাইয়া সুলতানা সাবা। বিউটি আক্তারের অভিযোগ, বিয়ের পর সংসারে সুখের স্বপ্ন দেখলেও বাঁধ সেধে বসেন শাশুড়ি ফাতেমা বেগম ও ননদ বাংলাদেশ পুলিশ সদস্য (রংপুর আর আর এফ পুলিশ লাইনস) সাহানাজ বেগম। এদের কুপরামর্শে দেড় লক্ষ টাকা যৌতুক দাবীতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন স্বামী শাহাজুল ইসলাম। এথেকেই বিউটি আক্তারের জীবনে নেমে আসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের কালো থাবা। এরপরও সন্তানের মুখ পানে চেয়ে বুক ভরা আশা নিয়ে সকল অত্যাচার নিরবে সয়ে ঘর সংসারে লিপ্ত থাকেন। এরই ধারাবাহিকতার মুখে স্বামী শাহাজুল ইসলাম গত ২২-০৭-২০২১ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক দেড়টায় শাশুড়ি ও ননদের কুপরামর্শে পূনরায় দেড় লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে বসেন। এতে পিতার অক্ষমতার কারণে বিউটি আক্তার দাবি পূরণে অনীহা প্রকাশ করেন। এঘটনায় নিষ্ঠুর পাষান্ড স্বামী শাহাজুল ইসলাম গৃহবধূ বিউটি আক্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেধড়ক মারপিটে গুরুতর আহত করে বাড়িতে আবদ্ধ করে রাখেন। এমতাবস্থায় বিউটি আক্তার নিজের শারীরিক অবস্থার অবনতি বুঝতে পেরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে নিজেকে বাঁচার আকুতি জানান। পরে থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় উলিপুর হাসপাতালে ভর্তি করান। এখান থেকে সুস্থ হয়ে ৫ বছরের শিশুকন্যাকে নিয়ে মনের ক্ষোভে অশ্রæসজল নয়নে দীর্ঘশ্বাস ফেলে অবস্থান নেন নিজ পিত্রালয় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধর্মপুর গ্রামে। এই বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারছেনা বিউটি আক্তার। অবশেষে স্বামীর বর্বরতা আর নির্যাতনের স্বপ্ন তাকে বিমুর্ষ করে তুলছে।
তাই নির্যাতিতা গৃহবধূ বিউটি আক্তার গত ২৯-০৮-২০২১ ইং তারিখে স্বামী শাহাজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৩ জনের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় একটি মামলা (নং ৩৪/ ২০২১) দায়ের করেন। প্রত্যাশা আসামিদের গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারের।