গাইবান্ধার মেয়ে মৃত্তিকা রাশেদ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছেন। তিনি শহরের পূর্বপাড়ার রাশেদ বিপ্লবের একমাত্র কনা। মত্তিকার বাবা রাশেদ বিপ্লবও একজন মিডিয়া নাট্য নির্মাতা। উৎসবে বাংলাদেশের একমাত্র নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পুরস্কত হন মৃত্তিকা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে গত ১৪ থেকে ২২ জানুয়ারি ৯দিনব্যাপী একবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে রেইনবো ফিল্ম সোসাইটি। উৎসবে ৭১টি দেশের ২৫২টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। এতে বাংলাদেশের নারী চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতিনিধিত্ব করেন মৃত্তিকা রাশেদ। তার নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র কৃষ্ণপক্ষ’- এ বার্নিং সোল ‘বাংলাদেশ প্যানারোমা শর্ট ফিল্ম সেকশনে’ ২য় রানারআপ হয় (ক্যাশ অ্যাওয়ার্ড- ১ লক্ষ টাকা)।
একমাত্র বাংলাদেশী নারী চলচ্চিত্র নির্মাতা মৃত্তিকা রাশেদ বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের “ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন” ডিপার্টমেন্টের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। পড়াশোনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশি তিনি “মন্তাজ- চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রকাশনা” এর প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চলচ্চিত্রের প্রতি তার ভালোলাগা শুরু ছোটবেলা থেকেই। এরপর চলচ্চিত্রের প্রতি তার কৌতূহল বাড়তে থাকে, চলচ্চিত্র দেখতে দেখতে একসময় তার মনে চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন বাসা বাঁধতে থাকে। ২০১৩ সালে স্কুলপড়ুয়া মৃত্তিকা বানিয়ে ফেলেন তার প্রথম চলচ্চিত্র “অ”। ২০২২ সালের শেষ দিকে এসে নির্মাণ করেন তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্র “কৃষ্ণপক্ষ – এ বার্নিং সোল(A Burning Soul)
এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ প্রসঙ্গে মৃত্তিকা রাশেদ বলেন – “সিনেমা বানাবো বলে বহুবার বহু গল্প ভেবেছি। কখনও সুযোগের অভাবে আবার কখনও বা বাজেট সংকটে সেসব গল্প নিয়ে সিনেমা বানানো হয়নি! এবার সাহস করে একটি বানিয়েই ফেললাম। স্বল্প পরিসরে অল্প বাজেটে যতটুকু সম্ভব হয়েছে করেছি। এক্সপেরিমেন্টাল ফিল্ম, নিজের ঘরে সেট বানিয়ে শ্যুট করেছি। সবার সহযোগিতায় অবশেষে আমি এ চলচ্চিত্রের কাজ শেষ করতে পেরেছি। আমার চলচ্চিত্রটির গল্প আসলে চলচ্চিত্রকে ঘিরেই। নব্বই দশকে বাংলাদেশের সিনেমা হলের সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার, বর্তমানে সে সংখ্যা দেড়শো থেকে দুইশ হবে। এই পরিসংখ্যান যখন একজন ফিল্ম জার্নালিস্ট অনুধাবন করতে পারেন, তার মনস্তাত্তি¡ক জগতে ঘটতে থাকে নানান পরিবর্তন। এই একজন মানুষের বিচিত্র অনুভূতিকে আমি ভিজ্যুয়ালাইজ করার চেষ্টা করেছি। এ পুরষ্কার আমার সিনেমা নির্মানের যাত্রায় সবসময় অনুপ্রেরণা জোগাবে। সামনে আরো ভালো কিছু নির্মানের প্রত্যাশা করি।
“কৃষ্ণপক্ষ – A Burning Soul ” চলচ্চিত্রটি পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্য, শিল্পনির্দেশনা ও প্রযোজনা করেন মৃত্তিকা রাশেদ। কার্যনির্বাহী প্রযোজক রাশেদ বিপ্লব। অভিনয় করেছেন নাইম রাজ, সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন রাবী আহমেদ এবং জায়েদ বিন আশরাফ, সম্পাদনা করেছেন বনি চৌধুরী, চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন জাহিদ নান্নু, স্পেশাল ইফেক্ট এর কাজ করেছেন রাহান আল রাশিদ, সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আহসান আল মিরাজ, পোশাক পরিকল্পনা করেছেন জায়েদ বিন আশরাফ এবং স্টিল ফোটোগ্রাফির কাজ করেছেন নুহাশ ইসলাম।
অসংখ্য ধন্যবাদ …..